শিক্ষার দ্বিতীয় অধ্যায়
২০১৩ সালে, পরিবারের আর্থিক সমস্যার কারণে মাদ্রাসার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু মেহেদীর জীবনে নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে যায় ২০১৭ সালে, যখন তার মেজ ভাই ফেসবুকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে শিক্ষার সুযোগের বিষয়ে জানতে পারেন। এরপর তিনি বরিশালের সাগরদ্বীপ সরকারি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ব্রেইল পদ্ধতিতে পড়াশোনা শুরু করেন।
২০১৯ সালে, মেহেদি পিএসসি পরীক্ষায় ৩.৯২ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এর পরপরই তিনি কাশিপুর হাই স্কুল ও কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি দশম শ্রেণীর ছাত্র এবং ২০২৫ সালে এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সৃজনশীলতা ও সাফল্যের পথে
ছোটবেলা থেকেই মেহেদীর গানের প্রতি গভীর ভালোবাসা ছিল। ২০১৭ সালে, তিনি বাংলালিংক কারাওকে কনটেস্টে অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন এবং পুরস্কৃত হন একটি সিগনেচার গিটার দিয়ে। তার দুটি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে, যেখানে তিনি গান পরিবেশন করেন এবং অডিও ড্রামায় ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেন।
এছাড়া ও মেহেদি হাসান বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে মানবিক কাজে বিশেষ ভূমিকা পালন করছেন। তিনি গত মার্চ মাসে সারাদেশ ব্যাপী ১০ হাজার বৃক্ষ রোপনে বরিশাল জেলা সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে সফল করেছেন। এছাড়া ও আরো বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কাজে তার বিশেষ ভূমিকা আছে রয়েছে।
সংগ্রাম ও সাফল্যের উদাহরণ
মেহেদী হাসানের জীবন কেবল একটি গল্প নয়, এটি একটি শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত। তিনি তার প্রতিটি প্রতিকূলতা জয় করে প্রমাণ করেছেন যে, ইচ্ছাশক্তি ও মনোবল থাকলে কোনো বাধাই জীবনকে থামিয়ে রাখতে পারে না।
মেহেদী বর্তমানে এসএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তার জীবনের গল্প আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, সংগ্রাম আর অধ্যবসায়ই মানুষের জীবনের প্রকৃত সাফল্যের চাবিকাঠি। তার জন্য রইল শুভকামনা।